Thursday, January 12, 2017

Last visit

 উঠতে উঠতে ৯.২০ পরে ১০ মিনিটে সকলের সকল কাজ সেরে খাওয়া সহ বেরিয়ে পড়লাম, খুব ক্ষিপ্র বেগে চলছি যে আমার বুড়িমা কাল মারা গেছে ,তাতে আমার মা খুবই ভেঙে পড়েছেন আবার জানাজারও সময় হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু মানুষ যা চাই তা হয়না তা আবার প্রমাণিত!হরতালের কারণে যাত্রী নেই তাই গাড়ি যেতে চাইছে না ,যাহোক অনেক কষ্টে পৌছলাম|হাটা শুরু করেছি বাড়ির দিকে(আমাদের বাড়িতে সহজে যেতে পাশের গ্রামের ভেতর দিয়ে একটি রাস্তা আছে যা দিয়ে সহজে বাড়িতে পাড়ি জমানো যায় )যেতে দেখি এক নেতা কিছু ছাঙ্গ - পাঙ্গদের নিয়ে যাচ্ছেন, তো তাদের কথব্যকথন এই যে শালারা ভালো খানা করবে না, ৫ তারিখে খানা হবে!!!!

(আরে ছালা মানুষ মরলেই তোদের ভালো এই ভেবে যে একটা খানা খাওয়া যাবে!)
তা শুনলাম তারপর কিছুদূর আগাতেই গ্রামের বন্ধুদের সাথে দেখা, তো যাচ্ছি মৃতাকে দেখতে তো একজন বলল দাড়া আমিও যাব|ওকে চল |দেখে এলাম, দেখি মরা বাড়িতে অনেক মানুষ আসছে তাদের কিছু কথাও শুনলাম, কবরে জায়গা নিয়ে নাকি সমস্যা ,টাকা দিয়ে জায়গা কিনতে হবে কিন্তু কেও দেওয়ার লোক নেই অথচ যিনি মারা গেছেন তাঁর একটা ছেলে ও নাতি প্রকৌশলী অন্য আরএকে ছেলে ও ছেলের বউ হেলথ এ চাকুরি করত বা করে এবং মেয়েজামাই বিশিষ্ট সমাজসেবক রাজনীতিবিদ এবং শিল্পপতি পরে বুড়িমার অদূরসম্পর্কের এক নাতি এসে সমাধা করল! পরে দেখলাম কিছু বিশিষ্ট জনেরা এলেন তাদের মধ্যে দুএক জনের কথা বলি! তারমধ্যে একজন হল কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের অধক্ষ সাপ, তিঁনি আসছেন জানাজার সময় |পরে কবরের কাছে গেলেন, গিয়ে তাঁর পুরোনো এক বন্ধুর সাথে আলোচনা করছেন একটা খাবার নিয়ে তিঁনি নাকি তা অনেক দিন খান না (শুনে মনে হল এই পৃথিবীতে তারচেয়ে ভালো খাবার আর কিছুই নেই) বলে হাসাহাসি শুরু করে দিলে |দেখে মনে হচ্ছিল যে............
আর একজন হল কুষ্টিয়া জর্জ কোর্টের সাবেক প্রসিকিউটর যিনিও এসেছেন জানাজার সময় |দেখে মনে হল তাঁর খুব প্রিয় ব্যাক্তি ছিলেন মৃতা তাই তিঁনি কবরের উপরে জুতা পায়ে উঠে মুখ খুলতে বললেন|হায়রে পৃথিবী কত রঙ দেখাইলা আমারে |
এতকিছুর মাঝেও সবচেয়ে যে জিনিসটা আমার দৃষ্টিআকর্শন করল, তা হল আমরা যা দেখি সাধারণত মুদ্দার বড় ছেলে তাঁর মৃত বাবা - মা এর জন্য ক্ষমা চাই,কিন্তু তাঁর দুই অযোগ্য সন্তান তা করতে পারলেন না ক্ষমা চাইলেন তাঁর সেই অদূর সম্পর্কের নাতি!



জানাজায় ডোকার রাস্তাই দেখি আমাদের গ্রামের মেম্ববর সাহেব দাড়িয়ে ঢুকছিলাম আমারা কয়একজন একসাথে, আমার ই বয়সী সব | তিঁনি বললেন জানাজা শেষে দেখা করে যেতে ,আমাদের গ্রামের একটা উন্নয়ন প্রকল্প হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে | ওকে গেলাম আমাদের সম্পদ আমাদের কাছে রাখতে | গিয়ে দেখি একটা রেজিস্টার খাতায় নাম সই করতে হবে ,ওকে শুরু করে দিলাম সই করা ,আমি নিজেই ২০ টা করলাম (আমাদের জিনিস আমাদের কাছেই রাখতে হবে,কি গ্রামপ্রেম মাইরে!!)এসে দেখি আমাদের বাড়িতে অনেক লোক! যা হোক আমিই সবার ছোট, বেশ নানারা খুকুমণির মত আদর করল যেনো আমি কেবল ইশকুলে যাওয়া শুরু করেছি ,আদর খাওয়া শেষে তাঁদের বিদেয় দিয়ে গেলাম বাড়ির সামনের রাস্তা য় চোখে পড়ে গেল একটা রিয়েলিটি শো :শো টি হল ৩টি গ্রাম্য বালিকা রাস্তা ধরে আসছে উদ্মারের মত ,আর পেছন থেকে একটা নছিমন এসে দিল ধাক্কা দেখে মনে হল পশ্চিমা ছিনেমার কোনো স্টান্ড চলছে|সেখানে ই দেখা এক কোচিং এর পরিচালক সাপ এর সাথে ,ওমা নিয়ে গেলেন তার সাথে ,এই বলে যে কিছু লোকের সাথে কথা বলাতে এবং বললেন আমাকে ঐ কোচিং এ ক্লাশ নিতেই হবে| মাইরে!!! ইচ্ছে ছিল আজই মেসে ফিরে আসব শেষ পর্যন্ত পারলাম না, পরিচালক সাপ এর থেকে বিদেয় নিতে নিতে অনেক রাত হয়ে গেল, শেষে মায়ের ফোনে ফিরে গেলাম বাড়িতে ..........
উঁ বাড়ির টা বলব না "ঘরের কথা পরকে বলব কেনো!!!!!"

No comments:

Post a Comment